জিওগ্রাফি বিভাগে পড়ে বিদেশে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ ও প্রস্তুতি-Higher Study and Research in Geography and Environmental Science

 

Learn with Mithun Kumar- This post explains about higher study and research in abroad in the field of geography and environmental science and its related disciplines.
Environment Manager working in his project site. 

This post explains about higher study and research in abroad in the field of geography and environmental science and its related disciplines. 

আমার ফেসবুক পেইজে একজন ম্যাসেজ পাঠিয়েছিলেন যে "Geography and Environmental Science or Geography and Environmental Studies or Geography and Environment " এই বিভাগে পড়ার পর বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য কেমন সুযোগ সুবিধা পাবেন । তার প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে মনে হল একটু ভালো করেই লিখি যাতে করে লেখাটা সবার কাজে আসে ।  

আসলে সব বিষয়ের জন্য বিভিন্ন রকম সুযোগ সুবিধা থাকে । সেটা নির্ভর করবে আপনি কি চান সেটার উপর । হ্যাঁ  Geography and Environment এই বিভাগে পড়াশুনা করলে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রচুর সুযোগ সুবিধা আছে । বর্তমানে সবাই জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ বিপর্যয়, মঙ্গল গ্রহ অভিযান এইসব বিষয় নিয়ে ভাবছেন এবং গবেষণা করছেন । আর এর সাথে কম্পিউটার ও মহাকাশ প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এইসব বিষয় গবেষণায় । আসলে জিওগ্রাফিকে ফলিত বিজ্ঞান না মৌলিক বিজ্ঞান বলব এটা নিয়ে এটা নিয়ে বেশ দ্বন্দ্ব আছে ।  জিওগ্রাফিকে বলা হয় মাদার অব অল সায়েন্সবিভিন্ন বিষয় এখান থেকে সৃষ্টি হয়েছে । আবার এটা পড়তে গেলে সব বিষয়ের জ্ঞান দরকার হয় । মহাচিন্তার বিষয়। বাদ দেন ঐসব চিন্তা পরে করা যাবে। 

Geography and Environment বিষয়ে পড়তে গেলে এর বিভিন্ন শাখার সাথে আপনাকে পরিচিত হতে হবে । জিওগ্রাফির বিভিন্ন শাখা-প্রশাখা নিম্নরূপ-

১) জিওইনফরমেটিক্স (Geo-Informatics) - উন্নত অনেক দেশে এটা কম্পিউটার এন্ড ইনফরমেশন সায়েন্স”, “স্পেস টেকনোলোজি”, “স্পেশাল (Spatial) সায়েন্স”, “রিমোট সেন্সিং এন্ড জিআইএস  এইরকম বিভিন্ন নামে পড়ানো হয় । এছাড়া কম্পিউটার সায়েন্স”, “অ্যারোনোটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং” “মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং”, “নেভিগেশনএইসব বিভাগের বিভিন্ন কোর্স হিসেবে পড়ানো হয় ।

২) আবহাওয়া বিজ্ঞান/জলবায়ু বিজ্ঞান (Meteorology/Climatology)- অনেক দেশে এই নামে বিভাগই থাকে । তাছাড়া পদার্থ বিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞান, এভিয়েশন, গনিত, কৃষি বিজ্ঞান, ফরেস্ট্রী বিভাবে পড়ানো হয় ।

৩) সমুদ্রবিদ্যা (Oceanography/ Marine science) – দেশে ও বিদেশে এই নামে বিভাগ আছে । এছাড়া মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, নেভিগেশন, ভূমিকম্প প্রকৌশল, ফিশারিজ, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি বিভাগে এই বিষয় পড়ানো হয় ।

৪) মৃত্তিকা বিজ্ঞান (Soil Science) - এই নামেই দেশে বিদেশে বিভাগ আছে । এছাড়া কৃষি বিজ্ঞান, ভূতত্ব ও খনি বিদ্যা, খনি ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফরেস্ট্রী, উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগে এই বিষয় পড়ানো হয় ।

৫) জিওমরফলজি (Geomorphology) - অনেক দেশে এই নামেই বিভাগ থাকে । এছাড়া ভূতত্ব ও খনি বিদ্যা, খনি ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ভূমিকম্প প্রকৌশল, উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগে পড়ানো হয় ।

৬) Agricultural Geography– এটা দেশের বাইরে এখন ব্যপক চাহিদা। সারাবিশ্বে কৃষির আধুনিকায়ন ও ডিজিটাইজেশনে ব্যপক প্রয়োগ হচ্ছে এই বিষয়ের। দেশে সরাসরি জিওগ্রাফী বিভাগে এবং কৃষি বিজ্ঞান, মৃত্তিকা বিজ্ঞান, আঞ্চলিক পরিকল্পনা বিভাগগুলোতে এই বিষয় পড়ানো হয়।

৭) বায়োজিওগ্রাফি (Biogeography)- এই শাখার নামেও অনেক দেশে বিভাগ আছে । এছাড়া প্রাণীবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, কৃষি বিজ্ঞান, ফরেস্ট্রী, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি বিভাগে পড়ানো হয় ।

৮) আরবান জিওগ্রাফি ( Urban Geography)- এটা জিওগ্রাফির শাখা হিসেবে পড়ানোর পাশাপাশি সারাবিশ্বে Urban and Regional Planning নামে পড়ানো হয় । অনেক দেশে এই নামে সরাসরি বিভাগ থাকে । এছাড়াও পরিবহণ পরিকল্পনা, স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগে পড়ানো হয় ।

৯) পরিবহণ জিওগ্রাফি (Transport Geography)- এটা জিওগ্রাফির শাখা হিসেবে পড়ানোর পাশাপাশি সারাবিশ্বে Urban and Regional Planning নামেও পড়ানো হয় । অনেক দেশে এই নামে সরাসরি বিভাগ থাকে । এছাড়াও নগর পরিকল্পনা, স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগে পড়ানো হয় ।

১০) কালচারাল জিওগ্রাফি (Cultural Geography)- এইটা বিভিন্ন দেশে সামাজিক বিজ্ঞান স্কুলে পড়ানো হয় । এছাড়া প্রত্নতত্ব সহ বিভিন্ন বিভাগে পড়ানো হয় ।

১১) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা (Disaster Management)- জিওগ্রাফির ফলিত বিষয় । এখানে জিওগ্রাফিসহ বিভিন্ন বিষয়ের জ্ঞান প্রয়োগ করা হয় ।

১২) মেডিকেল জিওগ্রাফি (Medical Geography)- এইটা মেডিকেল সায়েন্স, জনবিজ্ঞান, সামজিক বিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয়ে পড়ানো হয় । মেডিকেল সায়েন্সে Spatial Epidemiology নামে পড়ানো হয়। 

১৩) সম্পদ ব্যবস্থাপনা (Resource Management)- অনেক দেশে এইটা সরাসরি বিভাগ হিসেবে পড়ানো হয় । এছাড়াও পরিবেশ ব্যবস্থাপনা, অর্থনীতি প্রভৃতি বিষয়ে পড়ানো হয় ।

১৪) পরিবেশ ব্যবস্থাপনা (Environmental Management)- এইটা অনেক দেশে সরাসরি বিভাগ হিসেবে পড়ানো হয় । এছাড়াও সম্পদ ব্যবস্থাপনা, অর্থনীতি, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি বিষয়ে পড়ানো হয় ।

১৫) পপুলেশন জিওগ্রাফি (Population Geography)- অনেক দেশে এটা সরাসরি বিভাগ হিসেবেও পড়ানো হয় । এছাড়া পরিসংখ্যান বিষয়ে পড়ানো হয় ।

 

এই হল জিওগ্রাফির শাখা-প্রশাখা । আরও শাখা-প্রশাখা আছে । আমি প্রধানগুলো বললাম। এখন আপনার ব্যাপার আপনি কোন বিষয় নিয়ে সামনে চলবেন । একজন জিওগ্রাফির শিক্ষার্থীকে এইসবগুলো বিষয় পড়তে হয় অনার্স ও মাস্টার্সসহ ৫ বছরে । আমাদের দেশে যেটা হয় সেটা হল ৩য় বর্ষ শেষ করে ৪র্থ বর্ষে এসে গবেষণা করতে হয় উক্ত যেকোন বিষয় ধরে । এই সময় এসে বিষয়, গবেষণা প্রস্তাবনা ও প্রকল্প সুপারভাইজার পছন্দ করে আবেদন করতে হয় । যেমন আমার পড়ার বিষয় ছিল জিওইনফরমেটিক্স । তারপর পরীক্ষা কমিটি পুর্ববর্তী রেজাল্টের ভিত্তিতে পছন্দের বিষয় দিয়ে থাকে । এইভাবে একজন শিক্ষার্থীর একটা বিষয়ের উপর বিশেষজ্ঞ হওয়ার সূচনা হয় । মাস্টার্সে এসে আবার বিষয় পছন্দ করতে হয়, কোর্স চয়েস দিতে হয় এবং থিসিস করলে গবেষণা প্রস্তাবনা ও থিসিস সুপারভাইজার পছন্দ করে আবেদন করতে হয় । এক্ষেত্রে আমি যেটা মনে করি সেটা হল পুর্ববর্তী বিষয় নিয়ে গবেষণা করা ও সেই সম্পর্কিত কোর্স চয়েস দেওয়া এবং পুর্ববর্তী সুপারভাইজারের সাথেই গবেষণা করা । এইভাবে একজন শিক্ষার্থীর একটা বিষয়ের উপর বিশেষজ্ঞ হতে আরো একধাপ এগিয়ে যায় । এইভাবে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য অবশ্যই আমাদের উচিত হবে দেশে সম্মান শেষ বর্ষে ও মাস্টার্সে পড়ার জন্য যে বিষয় পছন্দ করা হয়েছে ও গবেষণা করা হয়েছে সেই সম্পর্কিত বিষয়ে পড়াশোনা ও গবেষণা করা ।


এইবার জিওগ্রাফির সেইসব শাখা-প্রশাখাগুলো ভালো করে লক্ষ করুন । বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য এবার এইগুলো গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করবে । যখন আমরা বিদেশে আবেদন করব তখন আমাদেরকে ঐসব (জিওগ্রাফির শাখা-প্রশাখা) বিভাগে এবং ঐসব রিলেটেড বিভাগ যেমন- সরাসরি জিওইনফরমেটিক্স এবং এই বিষয় যেসব বিভাগে পড়ানো হয় যেমন- কম্পিউটার এন্ড ইনফরমেশন সায়েন্স”, “স্পেস টেকনোলোজি”, “স্পেশাল (Spatial) সায়েন্স”, “রিমোট সেন্সিং এন্ড জিআইএস  এইরকম বিভিন্ন নামে পড়ানো হয় । এছাড়া কম্পিউটার সায়েন্স”, “অ্যারোনোটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং” “মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং”, “নেভিগেশনএইসব বিভাগে আবেদন করতে হবে । তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রাথমিক যোগ্যতা, গবেষণা প্রস্তাবনা, জিআরই, আইএলটিএস, রেজাল্ট প্রভৃতি বিবেচনা করে বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয় আমাদেরকে পড়ার সুযোগ দিবে । শুধু জিওগ্রাফি না অন্যান্য বিভাগে পড়লেও একইভাবে আপনাকে প্রস্তুতি নিতে হবে। 

আসলে প্রত্যেক বিষয়েই পড়ার জন্য বিভিন্ন দেশে প্রচুর সুযোগ সুবিধা আছে । আসল বিষয় হল নিজেকে সঠিক ভাবে তৈরি করা ।

আমার এই লেখায় শুধু জিওগ্রাফির এন্ড ইনভাইরনমেন্ট বিষয়ে দেশে পড়ার পর বিদেশে পড়ার কেমন সুযোগ পাওয়া যায় এবং কিভাবে সম্মান প্রথম বর্ষ হতে শুরু করতে হয় সেটা বলেছি । এই বিভাগে পড়ার পর দেশে বিদেশে কেমন চাকরির সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাবে সেটা আপনারা ইন্টারনেটে প্রচুর পরিমানে তথ্য পাবেন । আর তাছাড়া ফান্ডসহ বিদেশে পড়ার চান্স পেলে ঐটায়তো আপনার চাকরি ।

আরো পড়ুনঃ  SERC-তে শিক্ষার্থীদের জন্য নির্দেশিকা-SERC Guidelines by Mithun Kumar

0 মন্তব্যসমূহ